ভবনের নানা জায়গা জুড়ে থাকবে মুক্তিযুদ্ধের নানা প্রতিকি অনুষঙ্গ !
টেক্সট বাই ইমতিয়াজ শাইখ।
ঘটনাটি ১৯৭১ এর।
দেশে তখন যুদ্ধ চলছিল। চট্টগ্রাম বন্দরে এসে পৌঁছোয় পাক-হানাদারদের অস্ত্রবাহী জাহাজ আর সেই জাহাজের অস্ত্র খালাসের জন্য আদেশ দেয়া হয় আহমেদুর রহমান কে। আহমেদুর রহমান ছিলেন পাকিস্থানের সমরাস্ত্র কারখানার একজন দক্ষ সমরাস্ত্র প্রকৌশলী । সেদিন তিনি সেই আদেশ পালন করেননি। বিদ্রোহ ঘোষনা করেছিলেন তাদের বিরুদ্ধে। কারণ তিনি জানতেন এই অস্ত্র ব্যাবহার করা হবে এদেশের নিরস্ত্র খেটে খাওয়া মানুষকে হত্যা করতে। যুদ্ধকালীন সময়ে তিনি উড়িয়েছিলেন স্বাধীন বাংলার পতাকা, নির্ভয়ে সাহায্য করেছিলেন মুক্তিবাহিনীকে। আর তারই প্রতিদান তাঁকে দিতে হয়েছিল একাত্তুরের এক কালরাতে।
২২ শে এপ্রিল, ১৯৭১। আহমেদুর রহমানের এম এম আলি রোডের বাড়ির সদর দরজায় ঠক ঠক কড়া নাড়ার শব্দ হয়। দরজা খুলতেই ঢুকে পড়ে পাকবাহিনী, টেনে হিঁচড়ে নিয়ে যায় বাড়ির বাইরে। পিছু পিছু উঠোনে ছুটে যায় তার স্ত্রী,পুত্র-কন্যারা। তাদের শত কান্না-আকুতি গলাতে পারেনি পাক-হানাদারদের মন। ধরে নিয়ে যায় তাঁকে। এরপর দিন যায়, মাস যায়, ন-মাসের যুদ্ধও শেষ হয়ে যায়। পরিবারের অপেক্ষার প্রহর বাড়ে। অপেক্ষাগুলো প্রতিক্ষা হয়। তবুও তিনি ফিরে আসেন না। তিনি আত্মাহুতি দিলেন দেশের জন্য, দেশকে ভালোবেসে, দেশকে বাঁচাতে।
তিনি আজ নেই। আছে তার সেই বাড়ি-ভিটে। তার সেই স্মৃতিমাখা ভিটেতে র্যাংকস এফসি প্রোপার্টিজ লিমিটেড নির্মান করছে ৯ তলার বিলাসবহুল অ্যাপার্টমেন্ট প্রকল্প মেমোরী ৭১। যে ভবনের পরতে পরতে থাকবে একাত্তুরের স্মৃতি গাঁথা। ভবনের নানা জায়গা জুড়ে থাকবে মুক্তিযুদ্ধের নানা প্রতিকি অনুষঙ্গ।
প্রায় সাড়ে ৯ কাঠা জায়গার উপর অবিশ্বাস্য দ্রুতগতিতে এগিয়ে চলছে নির্মান কাজ। ইতমধ্যেই ভবনের ৪ তলার কাজ শেষ হয়েছে। এই ভবনে থাকবে যান্ত্রিক জীবনে প্রশান্তি এনে দেয়ার নানা অনুষঙ্গ। ইট-কাঠ-পাথরের দালানে প্রাণের স্পর্শ আনতে ভবনের দেয়াল ঘেষে উঠবে সবুজ ভারটিক্যাল গার্ডেন। সামনে লনে থাকবে সবুজ বাগান যা ভবনটিকে করবে আরও নান্দনিক। বাচ্চাদের খেলার জন্য কিডস জোন, কমিউনিটি হল, দ্রুতগতি সম্পন্ন লিফট, জরুরী নির্গমণ সিড়ি সহ স্বাচ্ছন্দময় জীবনধারার নানা সুবিধার সম্মিলন ঘটবে এই প্রকল্পে।
এই প্রকল্পের স্থাপত্য নকশা করছে র্যাংকনের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান ইনস্পেস আর্কিটেক্ট। “ব্যস্ত নগরের ক্লান্ত জীবনে এক চিলতে প্রশান্তি এনে দিতে মুল নকশায় ইট-পাথরের দালানের সর্বত্রই সবুজের স্পর্শ দিতে চেষ্টা করেছি। সবুজায়নের সাথে আধুনিকতার মিশেলে পরিবেশ বান্ধব স্থাপত্য নকশা করাই আমাদের লক্ষ” এমনটাই বললেন মেমোরী ৭১ এর প্রধান স্থপতি ওয়াহিদুর রহমান আদিব।
এই প্রকল্পের একজন গর্বিত ক্রেতা, মোহাম্মদ রেজাউর রহমান (পারভেজ) প্রকল্পের অগ্রগতিতে অত্যন্ত সন্তুষ্টি প্রকাশ করেন। তিনি বলেন, “নগরীর হাজারো অ্যাপার্টমেন্টের ভিড়ে মেমোরী ৭১ এর ডিজাইন অনন্য। র্যাংকস এফসি অত্যন্ত দ্রুততার সাথে প্রকল্পের কাজ করে যাচ্ছে। তাদের কাজ ও ব্যবহারিত নির্মান সামগ্রী অত্যন্ত গুনগতমান সম্পন্ন। আমার বিশ্বাস নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যেই তারা প্রকল্প হস্তান্তর করবে।”
প্রকল্পটিতে ২০৫১ ও ২৪৫২ বর্গফুটের মোট ১৬ টি অ্যাপার্টমেন্ট থাকবে। ২০২০ এর মধ্যেই প্রকল্প হস্তান্তর করতে পারবে বলে আশা করছে র্যাংকস এফসি প্রোপার্টিজ লিমিটেড।